দিগন্ত জোড়া জমিতে চাষ করা হয় রজনীগন্ধা, গোলাপ, গ্লাডিওল্যাস আর গাঁদা ফুল। সেখান থেকে ফুল সংগ্রহ করে গরুর গাড়িতে গদখালী বাজারে নিয়ে আসা হয়। গদখালী থেকে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছে যায় ফুলের রাজধানীর সৌরভ। গদখালী যাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাস। এখন প্রায় সারা বছরই বাহারি ফুলের সৌন্দর্য দর্শনার্থীদের বিমোহিত করে।
গদখালী (Godkhali) বাংলাদেশের ফুলের রাজধানী হিসাবে সুপরিচিত। যশোর জেলা শহর থেকে বেনাপোলের দিকে ১৮ কিলোমিটার এগুলেই গদখালী বাজার। গদখালীতে আসা ফুলগুলো যশোর থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরে ঝিকরগাছা ও শার্শা থানার ৯০ টি গ্রামের প্রায় ৪ হাজার বিঘা জমিতে চাষ করা হয়। ঝিকরগাছা ও শার্শা থানার গ্রামগুলোর রাস্তার দুইপাশে দিগন্তবিস্তৃত জমিতে লাল, নীল, হলুদ, বেগুনি আর সাদা রঙের ফুলের সমাহার দেখে মন্ত্রমুগ্ধের মত তাকিয়ে থাকতে হয়। এছাড়া ফুলের সুগ্রান, মৌমাছির গুঞ্জন, আর রঙিন প্রজাপতির ডানায় ভর করে এখানে আসে চিরন্তন সুন্দরের বারতা।
কিভাবে যাবেন
ঢাকা থেকে বাসে যশোর : রাজধানী ঢাকা থেকে সড়ক, রেল এবং আকাশপথে যশোর যাওয়ার সুযোগ রয়েছে। ঢাকার কল্যাণপুর, গাবতলী এবং কলাবাগান থেকে সোহাগ, গ্রিন লাইন, শ্যামলী এবং ঈগল পরিবহণের বেশকিছু এসি ও নন-এসি বাস যশোরের উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। মানভেদে যশোরগামী নন-এসি বাসে ভাড়া ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা এবং এসি বাসের ভাড়া ৮০০ থেকে ১০০০ টাকা।
ঢাকা থেকে ট্রেনে যশোর : ঢাকার কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশান থেকে শনিবার ছাড়া সপ্তাহের ৬ দিন সকাল ৬ টা ২০ মিনিটে আন্তঃনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন যশোর অভিমুখে যাত্রা করে। এছাড়া চিত্রা এক্সপ্রেস নামক আর একটি আন্তঃনগর ট্রেন সোমবার ছাড়া সপ্তাহের অন্য ৬ দিন সন্ধ্যা ৭ টার সময় যশোরের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এসব ট্রেনে শ্রেণিভেদে টিকেটের মূল্য শোভন ৩৫০, শোভন চেয়ার ৪২০, প্রথম শ্রেণি চেয়ার ৫৬০, প্রথম শ্রেণি বার্থ ৮৪০, স্নিগ্ধা এসি চেয়ার ৭০০ এবং এসি বার্থ ১২৬০ টাকা।
এছাড়া ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের ডোমেস্টিক টার্মিনাল থেকে রিজেন্ট এয়ারলাইন্স, ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স ও নভো এয়ারের বিমান যশোরের উদ্দেশ্যে নিয়মিত চলাচল করে।
যশোর থেকে গদখালী : গদখালী ফুলের রাজ্যে যেতে হলে যশোর বাস স্ট্যান্ড কিংবা যশোর শহরের যেকোন প্রান্ত থেকে রিক্সা ভাড়া নিয়ে লোকাল বাস স্ট্যান্ডে আসতে হবে। লোকাল বাস স্ট্যান্ডে থেকে গদখালি যাবার বাস পাওয়া যায়। গদখালি পৌঁছে ফুলের চাষের জমি দেখার জন্য ভ্যান নেয়া যাতে পাড়ে। দরদাম করে এক ঘন্টার জন্য ভ্যান ভাড়া নিতে ১০০-১৫০ টাকা লাগতে পাড়ে।
কোথায় কি খাবেন
যশোর আসলে এখানকার বিখ্যাত জামতলার মিষ্টি, খেজুরের গুড়ের প্যারা সন্দেশ ও ভিজা পিঠা মিস করা মোটেও উচিত হবে না। এছাড়া চার খাম্বার মোড়ের ‘জনি কাবাব’ থেকে কাবাব, ফ্রাই, চাপ বা লুচি খেতে পারেন। সেই সাথে ধর্মতলার মালাই চা এবং চুক নগরের বিখ্যাত চুই ঝাল খাবারের স্বাদ থেকে নিজেকে বঞ্চিত করার কোন মানে নেই!
কোথায় থাকবেন
গদখালী ফুলের রাজ্যে বেড়াতে হলে রাতে থাকার জন্য যশোর শহরই উত্তম। ঝিকরগাছায় জেলা পরিষদের ২ টি ডাকবাংলো রয়েছে। যশোর শহরে থাকার হোটেল গুলোর মধ্যে উন্নতমানের হোটেল গুলোর মধ্যে আছে হোটেল সিটি প্লাজা ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল হাসান ইন্টারন্যাশনাল, জাবির ইন্টারন্যাশনাল হোটেল, হোটেল আর.এস ইন্টারন্যাশনাল, হোটেল শামস ইন্টারন্যাশনাল ইত্যাদি। এছাড়া যশোরে বেশকিছু সরকারি রেস্ট হাউস এবং মোটামুটি মানের আরও বেশ কিছু হোটেল আছে।
2 মন্তব্যসমূহ
Thanks bro
উত্তরমুছুনধন্যবাদ। সুন্দর পোস্ট
উত্তরমুছুন